ডানা উড়িয়ে দিয়েছে প্রজাপতি । কাল যে শুঁয়োপোকাটা
সম্ভাবনাময় ছিলো , আন্দাজ মতো যদিও তার প্রজাপতি হওয়ারই কথা । কিন্তু মানবমনের অক্ষোহিনী
জিজ্ঞাসা, এটা কি কবিতা হলো, কিংবা কবিতা হলো না । আসলে কবিতাগুলো কখনোই কবিতা নয়,
যদি সেখানে পাঠক না থাকে । মানুষ তার মনের অবস্থান খুঁজে নিতে চায়, তার নিজের কিছু
হিডেন স্টেট আছে । সেগুলি সে নানান ফিল্টার হিসাবে ব্যাবহার করে । সে ক্রমাগত পারমুটেশন,
কম্বিনেশন করে, এভারেজ করে চলতে থাকে, এবং এক একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে থাকে । এইভাবে
জারি থাকে তার শিক্ষা । শিক্ষার কোন একটি স্তরে সে ক্লাসিফাই করে করে নিজেরই চেনা প্যাটার্নের
সঙ্গে, কিংবা সে বুঝতে পারে এটা কোন প্যাটার্নই নয় । সেটা কবিতা হলো বা না হলো, তার
দায় থাকে না । পাঠক গ্রহণ করে বা বর্জন । কমলিকা, কবিতা লেখা শিখছে । পাখনা মেলেছে
সে । তার মনের সাহিত্য বৃক্ষটি এখন সবে মাত্র অঙ্কুরোদগম করলো । যা শীঘ্রই শিশু পত্রালিকার
বিকশিত হবে । এই পৃথিবীর শিল্প, সংস্কৃতি, পণ্য, দাম, দর, কেনা বেচা লেগে যে একদিন
মহীরুহে পরিণত হবে । যদি স্মৃতি সারণী সত্যিই সম্ভব হয়, টেকনোলোজির উৎভাবনের মাধ্যমে
অদূর ভবিষ্যতে তা সীমিত ভাবে লিখিত হবে । দু দশক আগেও সে সোসাল মিডিয়া আসে নাই, কাগজে
নিজে প্রকাশ করতে হয়েছে কবিতা, গদ্য , চিঠি । আমার নিজস্ব আন্দাজ মতো এই দশকের শেষেই
কম্পিউটার এইডেড কবিতা লেখা শুরু হয়ে যাবে । আগামী ১৫ বছরের মধ্যে টেক্সট উৎপাদন শুরু
হয়ে যাবে বাংলা ভাষায় । আজকের বাংলা সাহিত্যের
যদি এই আজকের মতো থাকে, ২০৪০ সাল নাগাদ, স্বয়ংক্রিয় ভাবে আজকের যুগের সনেট কবিতা
কম্পিউটারের লেখা যাবে । কম্পিউটার এইডেড কবিতা থেকে তখন আমরা অপেক্ষা করবো কম্পিউটার
জেনারেটেড কবিতা । আজকের এভারেজ ফেসবুক কবিতাগুলি আগামী ১০ বছরেই রিডান্ডান্ট হয়ে যাবে
। কবি মানিক ঘোষ, কবি শ্রীলতা রায় তবুও কোন না কোন ওয়েবসাইটে কবিতা লিখতে থাকবেন, কবি
নাসিফা বানো ও অণু গল্পকার বিপিন গুহরায় কাগজের গন্ধ শুঁকার নেশায় কলেজ স্ট্রীট থেকে
বই প্রিণ্টেট হার্ডবোর্ডে বাঁধানো বই বের করবেন । যদি সে পর্যন্ত বেঁচে থাকি, আগামী
২০৫০ খ্রিস্টাব্দে কবিতার আজকের কবিতা অবস্থার আমূল পরিবর্তন দেখে যাবো । মানব প্রজাতির
সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কবিতা লিখছেন কম্পিউটার । আজ যে কবিতায় আমরা অসাধারণ অপূর্ব বলে
একে অপরকে ফেসবুকে কমপ্লিমেন্ট করছি, সেই কবিতাও ২০৫০ অব্ধি রিজেনারেট করা যাবে । এই
রকম সফটওয়ার তৈরি হচ্ছে, অনেক এইরকম সফটওয়ার তৈরি হয়ে যাবে । দ্রুত জায়গা করে নিচ্ছি
ডিপ লার্নিং, তথাকথিত স্টোরেজ সিস্টেম কে বদলে দিচ্ছে ক্লাউড টেকনোলোজি । আর্টিফিসিইয়াল
ইন্টেলিজেন্স এখন সহজ লব্ধ । কম্পিউটিং পাওয়ার গুণিতক হারে বাড়ছে, ঘরে ঘরে ইন্টারনেট
উপলব্ধ হয়েছে । এথিক্যাল প্রশ্ন তবুও থেকেই
যাব । তখন, কি বাকি থাকে , থাকে শুধু অন্ধকার, সম্মুখ দেওয়ালে ফুটে ওঠা একক ফুলদানী
। আজি হতে শতবর্ষ পরে কে তুমি পড়িছ আমার কবিতাখানি ।
Saturday, 30 May 2020
উড়াল
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment