জানালাটা আমি প্রায়ই এখন খুলে খুলে দেখছি । সূর্যের আলো এসে পড়ে , পাখিদের ডাক শুনি । এই জ্যোষ্ঠের নিদাঘে শুকনো পাতার মর্মরধ্বনি শুনি । জানালাটা তবু খোলে না । সে পড়শীকে আমার দেখা হবে কি? আমার ধারনা, এই পড়শী চাঁদকা টুকড়া হতে পারে না । সে কোন রাজকুমারীও নয় । যদি হতো, তার অন্য প্রেমিক দেখার সখ হতো । সে জানালার কপাট খুলে, এই সব পাখির হলুদ, পাতার সবুজ, রোদের হাটু গেড়ে বসা, এই সব দেখতে চাইতো ।
এতোদিনে আমার বদ্ধ ধারণা হয়েছে, এই পড়শী আমার মতোই হতভম্ভ, কনফিজড । সে জানলাটা এই কারনেই রেখেছে যাতে সে বোঝাতে পারে যে জানালা খোলার সময় তার নেই । নিজের মধ্যেই সে আটকে পড়েছে । সে ইচ্ছে করেই জানালাটা খোলে না । অন্য পড়শীরা যতই তাকে ঈর্শা করে, অন্য বন্ধুরা তাকে উপেক্ষা করে । হতে পারে সে আমারই মতো । জানালা রেখেছি, তবু খুলতে নারাজ ।
আমি একদিনও না দেখলাম তারে।। বাড়ীর কাছে আরশী নগর, এক পড়শী বসত করে।। গেরাম বেড়া অগাধ পানি; নাই কিনারা নাই তরণী পারে।। ধরব ধরব মনে করি, কেমনে সেথা যাইরে।। কি কব পড়শীর কথা, হস্তপদ স্কন্ধ মাথা নাইরে, ক্ষণে থাকে শূন্য ভরে, ক্ষণে ভাসে নীরে।। পড়শী যদি আমায় ছুতো, যম যাতনা সকল যেত দূরে, সে আর লালন একখানে রয়, লক্ষ যোজন ফাঁকরে।।