Saturday, 30 May 2020

ব্যাক ট্রাক


 

যতদূর স্মৃতিসারনী দিয়ে যাওয়া গেলো, কে কি ভাবে গেলো , আমাদের কোনদিন জানা হবে না । প্রত্যেক শব্দ, বাক্য, অনুষঙ্গ, রূপ রস গন্ধ যদি লিখে রাখা যেতো , অবশ্য ঐ রকম একটি পঙক্তি আমরা লিখতে পারতাম । কিছু ঘুরিয়ে, কিছু পেঁচিয়ে আমরা লিখছি যে নয়, তাও না । সোশ্যাল মিডিয়া, বইমেলাগুলি ঘুরলে তার বহু প্রমাণ পাওয়া যায় । সমস্তই আন্দাজ করা, প্যাটার্ন খুঁজে নেওয়া, সুখানুভূতি জাগায় এমন প্যাটার্ন আবিষ্কার করা । এগুলি সময় সাপেক্ষ, সঙ্গ সাপেক্ষ, এবং অবশ্যই পাঠক সাপেক্ষ । রূপ রস গন্ধ প্রত্যেক দশকে পালটে যাচ্ছে । সময়, পাঠক বদলে যাচ্ছে । আর শব্দ বাক্য অনুষঙ্গ থেকে যায়, অন্তত শতাব্দী পর্যন্ত তা কনস্ট্যান্ট থাকছে । এই তো বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম অব্যয় ও ক্রিয়া । একটি অর্থবহ বাক্য থেকে একটি কবিতা পঙক্তিতে উপনীত হলে, , অনুষঙ্গ, রূপ রস গন্ধ , সময়, পাঠক, পলিটিক্স, গুরুবাজী, প্রকাশন ইত্যাদি ফিল্টারের মধ্যদিয়ে যেতে হচ্ছে, বা হয়েছে । অর্থাৎ, আজকের যেটা কবিতার পঙক্তি, মাইক বাজিয়ে বাজিয়ে কবিতার আসরে যে কবিতা পড়া হচ্ছে – তা আসলে একটি স্মৃতিসারনী । সারণীটি সম্পূর্ণ হতে পারে, আবার নাও হতে পারে । শব্দের পর শব্দ যে ভাবে আসছে, যে ভাবে অভিধান তৈরি করা হয়েছে, শব্দগুলি বিশ্লেষণ করে ব্যাক ট্রাক করা যায় । লুকিয়ে থাকা অনুষঙ্গগুলি আন্দাজ করা যায় । বার বার, লক্ষ কোটিবার সেই আন্দাজগুলি আসল পঙক্তির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায় । সেই ভাবে, একশো শতাংশ না হোক, অন্তত: কিছু শতাংশ অনুধাবন করাই যায়, আন্দাজ করা যায় সিরিজের আগামী সংখ্যাটি কি । সেইভাবে খুঁজে পাওয়া যায় মিসিং লিঙ্ক । মনে না পড়া শব্দাবলী, বাক্য, খুঁজে না পাওয়া অন্ত্যমিল । গদ্য, উপন্যাস, কবিতার পঙক্তিতে এই ফিল্টারগুলো সেখানে গুপ্ত রয়েছে । যদি ফিল্টারগুলোকে ‘পরাষঙ্গ’ বা হিডেন স্টেট বলে অভিহিত করা যায়, সেটা এই রকম দাঁড়ায়:

 

শব্দাবলী + শিক্ষা + ‘পরাষঙ্গ’ =>  বাক্য

বাক্য + ব্যাকরণ + ‘পরাষঙ্গ’ => পঙক্তি

পঙক্তি + ‘পরাষঙ্গ’ + সজ্জা ( প্যাটার্ন)  => স্তবক 

স্তবক + ‘পরাষঙ্গ’ + পাঠক => কবিতা

 

‘পরাষঙ্গ’ বা হিডেন স্টেট, এক সময় এসে বোধ হয়ে সামনে দাঁড়ায়    এ সবই ঘটতে পারে, একটি সময়ে । এখন সময়কাল ২০২০ খ্রিস্টাব্দ । বলা যায় এখন ঘটছে ।  


No comments:

Post a Comment