যতদূর স্মৃতিসারনী দিয়ে যাওয়া গেলো, কে কি ভাবে গেলো , আমাদের কোনদিন জানা হবে
না । প্রত্যেক শব্দ, বাক্য, অনুষঙ্গ, রূপ রস গন্ধ যদি লিখে রাখা যেতো , অবশ্য ঐ রকম
একটি পঙক্তি আমরা লিখতে পারতাম । কিছু ঘুরিয়ে, কিছু পেঁচিয়ে আমরা লিখছি যে নয়, তাও
না । সোশ্যাল মিডিয়া, বইমেলাগুলি ঘুরলে তার বহু প্রমাণ পাওয়া যায় । সমস্তই আন্দাজ করা,
প্যাটার্ন খুঁজে নেওয়া, সুখানুভূতি জাগায় এমন প্যাটার্ন আবিষ্কার করা । এগুলি সময় সাপেক্ষ,
সঙ্গ সাপেক্ষ, এবং অবশ্যই পাঠক সাপেক্ষ । রূপ রস গন্ধ প্রত্যেক দশকে পালটে যাচ্ছে ।
সময়, পাঠক বদলে যাচ্ছে । আর শব্দ বাক্য অনুষঙ্গ থেকে যায়, অন্তত শতাব্দী পর্যন্ত তা
কনস্ট্যান্ট থাকছে । এই তো বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম অব্যয় ও ক্রিয়া । একটি অর্থবহ
বাক্য থেকে একটি কবিতা পঙক্তিতে উপনীত হলে, , অনুষঙ্গ, রূপ রস গন্ধ , সময়, পাঠক, পলিটিক্স,
গুরুবাজী, প্রকাশন ইত্যাদি ফিল্টারের মধ্যদিয়ে যেতে হচ্ছে, বা হয়েছে । অর্থাৎ, আজকের
যেটা কবিতার পঙক্তি, মাইক বাজিয়ে বাজিয়ে কবিতার আসরে যে কবিতা পড়া হচ্ছে – তা আসলে
একটি স্মৃতিসারনী । সারণীটি সম্পূর্ণ হতে পারে, আবার নাও হতে পারে । শব্দের পর শব্দ
যে ভাবে আসছে, যে ভাবে অভিধান তৈরি করা হয়েছে, শব্দগুলি বিশ্লেষণ করে ব্যাক ট্রাক করা
যায় । লুকিয়ে থাকা অনুষঙ্গগুলি আন্দাজ করা যায় । বার বার, লক্ষ কোটিবার সেই আন্দাজগুলি
আসল পঙক্তির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায় । সেই ভাবে, একশো শতাংশ না হোক, অন্তত: কিছু শতাংশ
অনুধাবন করাই যায়, আন্দাজ করা যায় সিরিজের আগামী সংখ্যাটি কি । সেইভাবে খুঁজে পাওয়া
যায় মিসিং লিঙ্ক । মনে না পড়া শব্দাবলী, বাক্য, খুঁজে না পাওয়া অন্ত্যমিল । গদ্য, উপন্যাস,
কবিতার পঙক্তিতে এই ফিল্টারগুলো সেখানে গুপ্ত রয়েছে । যদি ফিল্টারগুলোকে ‘পরাষঙ্গ’
বা হিডেন স্টেট বলে অভিহিত করা যায়, সেটা এই রকম দাঁড়ায়:
শব্দাবলী + শিক্ষা + ‘পরাষঙ্গ’ => বাক্য
বাক্য + ব্যাকরণ + ‘পরাষঙ্গ’ => পঙক্তি
পঙক্তি + ‘পরাষঙ্গ’ + সজ্জা ( প্যাটার্ন)
=> স্তবক
স্তবক + ‘পরাষঙ্গ’ + পাঠক => কবিতা
‘পরাষঙ্গ’ বা হিডেন স্টেট, এক সময় এসে বোধ হয়ে সামনে দাঁড়ায় । এ সবই
ঘটতে পারে, একটি সময়ে । এখন সময়কাল ২০২০ খ্রিস্টাব্দ । বলা যায় এখন ঘটছে ।
No comments:
Post a Comment